নিজের মামার নামে আদালতে হাজির হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেই কারাগারে আটক হয়েছেন শামীম আহমেদ (২৫)। যশোরের এই তরুণকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৯ অক্টোবর) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু কুমার মণ্ডল শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। শামীম সদর উপজেলার বড় ভেকুটিয়া গ্রামের জমসেদ আলীর ছেলে।

ঘটনার শুরু ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর। যশোর আর্মি মেডিকেলের এক শিক্ষার্থী দম্পতির বাড়িতে চাঁদাবাজি, হামলা ও লুটের অভিযোগে সাতজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়। ওই মামলার পাঁচ নম্বর আসামি ছিলেন হাসান।

২১ অক্টোবর দুপুরে আসামি হাসান সেজে আদালতে হাজির হয় তার ভাগনে শামীম। নিজের প্রকৃত পরিচয় আড়াল করে তিনি আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হলে শামীম আবারও নিজেকে হাসান বলে পরিচয় দেন। তবে তার অস্বাভাবিক আচরণে সন্দেহ হয় কারা কর্তৃপক্ষের। প্রযুক্তির সাহায্যে ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলিয়ে জানা যায়—আদালতে হাজির হওয়া ব্যক্তি আসলে আসামি হাসান নন, বরং তার ভাগনে শামীম আহমেদ।

এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করলে ২৩ অক্টোবর বেঞ্চসহকারী মোজাফ্ফর হোসেন বাদী হয়ে নতুন একটি মামলা করেন শামীম ও তার মামা হাসানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ—জালিয়াতি, প্রতারণা এবং আদালতকে বিভ্রান্ত করা।

পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইলিয়াস হোসেন ২৬ অক্টোবর শামীমকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। বুধবার শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ বলছে, কেন ও কী উদ্দেশ্যে সে মামার জায়গায় আদালতে হাজির হয়েছিল—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, এটি পরিকল্পিত প্রতারণা কিনা এবং প্রকৃত আসামি হাসান কোথায় আছেন—সেসব তদন্তাধীন।