মসজিদে আয়োজিত ইসলামী ছাত্রশিবিরের ‘দারসুল কোরআন’ প্রোগ্রামে ছাত্রদল ও যুবদল নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ তুলে ফেনীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ছাত্রশিবির।

রোববার (১৯ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে শহরের বড় মসজিদের সামনে থেকে ফেনী শহর শাখা ছাত্রশিবিরের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পবিত্র কোরআনকে কেন্দ্র করে আয়োজিত একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ছাত্রদল-যুবদল প্রমাণ করেছে, তারা ৩৬শে জুলাইয়ের চেতনা ও মুসলিম ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ ধরনের বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

জেলা জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক আ.ন.ম আবদুর রহিম বলেন, "ছাত্রশিবির আয়োজিত দারসুল কোরআন অনুষ্ঠানে যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজনীতি শেষ হয়েছে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট। কেউ যদি আবার সেই পথ বেছে নিতে চায়, ছাত্রজনতা তা প্রতিহত করবে।"

জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি আবু হানিফ হেলাল বলেন, "আমরা একটি ধর্মীয় শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম, সেখানে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। আমাদের ভাইদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। যারা ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তারা কখনো জনগণের সমর্থন পাবে না। নতুন বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে ইসলামী মূল্যবোধকে ধারণ করতে হবে।"

শহর শিবির সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, "নোয়াখালীতে কোরআন প্রেমিক মুসলমানদের ওপর যুবদলের সন্ত্রাসীরা যেভাবে হামলা চালিয়েছে, তারা ৩৬শে জুলাইয়ের বিরোধিতা করেছে। প্রশাসন থাকার পরও শিক্ষার্থীদের ওপর এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা কীভাবে সম্ভব হয়? আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার না করা হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।"

সমাবেশে ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার কাশেমবাজার মসজিদে ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত কোরআন শিক্ষার প্রোগ্রামে স্থানীয় এক যুবদল নেতার নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ ওঠে। হামলাকারীরা শিক্ষার্থীদের মসজিদ থেকে বের করে দেয় এবং প্রোগ্রাম পণ্ড করে দেয় বলে দাবি করেছে ছাত্রশিবির।

এ ঘটনায় আজ রোববার দুপুরে সুধারাম মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। প্রতিবাদস্বরূপ বিকেলে একই মসজিদে ‘দারসুল কোরআন প্রতিযোগিতা’ কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্রশিবির। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিকেলে নেওয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেমবাজার এলাকায় ছাত্রশিবির ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয় বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।