রাজবাড়ী সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক কেএম আজাদুর রহমানকে শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে একই কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মোস্তফা কামালের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. এহসানুল হক, ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. নাঈম মণ্ডল এবং এইচএসসি ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম রসুল ইফাত।

বক্তারা অভিযোগ করেন, গত ১৫ অক্টোবর বিকেলে প্রভাষক কেএম আজাদুর রহমানকে অফিস কক্ষ থেকে কলার ধরে টেনে নিয়ে মারধর ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন সহযোগী অধ্যাপক মোস্তফা কামাল। একজন সিনিয়র শিক্ষক হয়ে সহকর্মীকে এভাবে নির্যাতন করা অগ্রহণযোগ্য। তারা বলেন, “যদি শিক্ষকরা এমন আচরণ করেন, তবে শিক্ষার্থীরা তাদের কাছ থেকে কী শিখবে?”

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, গত ৫ আগস্টের পর থেকে মোস্তফা কামাল কলেজে ক্ষমতার অপব্যবহার করে একের পর এক শিক্ষককে অপমান করে চলেছেন। তিনি প্রায় ১৫ বছর ধরে কলেজে কর্মরত এবং এর আগে শিক্ষক তাপস দত্ত, জাহাঙ্গীর আলম ও মাহবুবুর রহমানের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেছেন। তাদের অভিযোগ, “মোস্তফা কামালের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ রাজবাড়ী সরকারি কলেজের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে।”

শিক্ষার্থীরা দ্রুত বিচার ও মোস্তফা কামালের অপসারণ দাবি করেন। মানববন্ধন শেষে তারা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম ইকরামুল করিম এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে আগত তদন্ত কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ পেশ করেন।

এদিকে, এ ঘটনার তদন্তে মাউশির গঠিত তিন সদস্যের একটি কমিটি রোববারই কলেজে উপস্থিত হয়ে সরেজমিন তদন্ত করে। তদন্ত কমিটিতে ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক ফকির মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, উপপরিচালক মো. শওকত হোসেন এবং সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ওবায়দুর রহমান।

তদন্ত কমিটির সদস্য ও উপপরিচালক মো. শওকত হোসেন বলেন, “প্রভাষক আজাদুর রহমানকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উচ্চপর্যায়ে পৌঁছানোর পর মন্ত্রণালয় থেকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। আমরা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছি এবং দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।”

অন্যদিকে, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়েও শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা একই দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। তারা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।