পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি প্রাণবন্ত কুকুরছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে হত্যার অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে এলাকাবাসী। অভিযুক্ত হিসেবে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের নাম উঠে এসেছে। তবে তিনি পুরো দায় স্ত্রীকে দিয়ে ঘটনাটি এড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।

রোববার (৩০ নভেম্বর) গভীর রাতে কুকুরছানাগুলোকে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলা হয়। সোমবার সকালে স্থানীয়রা পুকুরপাড়ে ভেসে ওঠা তাদের নিথর দেহ দেখতে পান। ঘটনাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো উপজেলা।

সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের সামনে মাটিতে সারিবদ্ধ পড়ে থাকা ৮টি ছোট্ট কুকুরছানার মরদেহ ছিল দৃশ্যমান। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মা কুকুরটি অবিরাম কান্না ও ছোটাছুটি করছিল—যা এলাকাবাসীকে আরও ব্যথিত করে তোলে।

স্থানীয়রা জানান, টম নামের মা কুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে ইউএনও’র বাসভবন এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে বাস করত। তাকে সবাই ভালোবাসত, খাবার দিত। মাত্র এক সপ্তাহ আগে জন্ম নেওয়া বাচ্চাগুলো স্বাভাবিকভাবেই এলাকাবাসীর স্নেহ কুড়িয়েছিল। কিন্তু রবিবার সকাল থেকেই মা কুকুরের অস্বাভাবিক আচরণ নজরে আসে। বাচ্চাদের না পেয়ে সে ইদুর-বেড়ালের মতো ছুটোছুটি করতে থাকে। পরে কর্মকর্তা–কর্মচারীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, উপজেলা সমবায় বিভাগের ওই কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী মিলে বাচ্চাগুলোকে হত্যা করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সাগর হোসেন রনি বলেন, “এটা নিছক পশু হত্যা নয়—এটা ভয়ংকর নিষ্ঠুরতা। জীবিত কুকুরছানাকে এভাবে পানিতে ফেলে মারতে পারে এমন মানুষ সমাজের জন্য হুমকি।”

অভিযুক্ত কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন দাবি করেন, “আমি কিছু করিনি, আমার স্ত্রী করেছে। বিষয়টি জানার পর আমি তাকে বকেছি।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেছেন, “ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”