রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন তোফায়েল আহমেদ তোফা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি ১২টি প্যানেলের প্রার্থীদের হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম।

মাত্র ২৭ ভোটের ব্যবধানে নাটকীয় জয়

নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে তোফা পেয়েছেন ৬,৭৮০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী হাচান হাওলাদার, যিনি পেয়েছেন ৬,৭৬৩ ভোট। মাত্র ২৭ ভোটের ব্যবধানে তোফা জয়ী হন।

কে এই তোফা?

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, তোফায়েল আহমেদ তোফা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাবের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামে

তোফা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও সক্রিয়ভাবে যুক্ত। সাংগঠনিক দক্ষতা ও কর্মমুখী ভাবনার জন্য তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগেই পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন।

যোগ্যতা থাকলে জয় সম্ভব’— বললেন তোফা

বিজয়ের প্রতিক্রিয়ায় তোফায়েল আহমেদ তোফা বলেন—

“শিক্ষার্থীরা যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিয়েছেন। গ্রহণযোগ্যতা থাকলে প্যানেলের প্রার্থীদেরও হারিয়ে বিজয়ী হওয়া সম্ভব— আমি তার বড় উদাহরণ। প্রথমেই শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাই। তাদের ভোটেই আমি আজ নির্বাচিত। ইনশাআল্লাহ, আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করে যেতে চাই।”

ব্যতিক্রমী উদাহরণ

রাকসু নির্বাচনে ২৩টি পদের মধ্যে ২০টি পদেই জয়ী হয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট। কেবল ৩টি পদে তারা পরাজিত হয়— যার মধ্যে একটি তোফা’র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদ। বাকি দুটি পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী নার্গিস খাতুন (ক্রীড়া সম্পাদক) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী না হয়ে স্বতন্ত্র প্ল্যাটফর্মে আসা সালাহউদ্দিন আম্মার (সাধারণ সম্পাদক)।

তোফা— স্বতন্ত্র রাজনীতির নতুন বার্তা?

তোফার এই জয় শুধু একটি আসনের ফলাফল নয়, বরং এটি দলীয় রাজনীতির বাইরে শিক্ষার্থীদের ভিন্নধারার আকাঙ্ক্ষার প্রতিচ্ছবি হিসেবেও দেখা হচ্ছে। তার নির্বাচনী প্রচারণায় ছিল সরলতা, স্বতঃস্ফূর্ততা এবং নিরপেক্ষ অংশগ্রহণের বার্তা— যা অনেকের দৃষ্টি কেড়েছে।