মাদারীপুরের কালকিনিতে শুরু হয়েছে ২০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলা। কালীপূজাকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই মেলায় শুধু কয়েক কোটি টাকার ফার্নিচারই বিক্রি হয়। পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়, যার কারণে হাজারো দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ।
মেলার আয়োজকরা জানাচ্ছেন, বাংলা ১৭৮৩ সালে মহেষ চন্দ্র কুন্ডু প্রথম এই মেলার আয়োজন করেন। এরপর থেকে প্রতিবছরই এই মেলার আয়োজন হয়ে আসছে। এবার মেলার জন্য দুই দিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা মঙ্গলবার শুরু হয়ে বুধবার দিবাগত রাত ১১টায় শেষ হবে।
মেলায় ঢাকা, নরসিংদী, বগুড়া, রাজশাহী, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্রেতারা অংশগ্রহণ করছেন। মেলার প্রধান আকর্ষণ কাঠের খাট, সোফা, আলমারি সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র। ক্রেতারা সুলভ মূল্যে পণ্য কেনার সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া অন্যান্য দোকানে রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ মেলাজুড়ে নজরদারি রাখছে। প্রশাসন জানিয়েছে, জুয়া-মাদক নিষেধ, উচ্চস্বরে শব্দযন্ত্র ব্যবহার না করা ও অবৈধ পণ্য বিক্রি বন্ধ রাখাসহ ১৫টি বিধিনিষেধ প্রযোজ্য।
মেলায় আসা দর্শনার্থীরা আনন্দ ও কেনাকাটার সুযোগ নিয়ে খুশি। ক্রেতা জুয়েল সাহা বলেন,এই মেলা আমাদের জন্য এক মিলন মেলা। সবাই স্বাচ্ছন্দে ঘুরছি, কেনাকাটা করছি।
রত্মা আক্তার সাথী বলেন,হিন্দু-মুসলিম সবাই এখানে আসে। এখানে স্বল্প দামে সব জিনিসপত্র পাওয়া যায়।
ফার্নিচার বিক্রেতা গোলাম সরোয়ার জানান,প্রতিবছর এই মেলায় ৮-১০ গাড়ি ফার্নিচার বিক্রি করি। এবারও আশা করছি সমান বিক্রি হবে।”
মেলার আয়োজক বাসুদেব কুন্ডু বলেন,ছোটবেলা থেকে দেখছি এভাবেই প্রতিবছর কুন্ডুবাড়ি মেলা হয়ে আসছে। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। তবে মেলার সময়সীমা বেশি হলে সবার জন্য ভালো হয়।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, মেলাকে ঘিরে সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উৎসবটি শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসন সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে।