কক্সবাজারে সরকারি অনুমোদন ছাড়া পর্যটকদের কাছে টিকেট বিক্রির দায়ে সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ কেয়ারি সিন্দাবাদকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত সোমবার সকালে এ ব্যবস্থা নেন।
চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্ট মার্টিন রুটে যাত্রা শুরু হয়। জাহাজ ছাড়ার আগ মুহূর্তে ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম অবৈধ টিকেট বিক্রির প্রমাণ পেয়েছিল। তিনজন পর্যটককে ১৮০০ টাকা করে সরাসরি ট্রাভেল পাস ছাড়াই টিকেট বিক্রির অভিযোগে জরিমানা করা হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, “কেবল কক্সবাজারের স্থানীয়রা জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকেট ক্রয় করতে পারবে। অন্যান্য পর্যটকদের জন্য সরকার অনুমোদিত ট্রাভেল পাস বাধ্যতামূলক। প্রথমবারের ঘটনা হওয়ায় আমরা জাহাজ কর্তৃপক্ষকে মুচলেকা দিয়ে সতর্ক করেছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সেন্ট মার্টিনে রাত্রিযাপনের সুযোগ ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এবং ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি পর্যটককে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকেট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানিয়েছেন, চলতি দিনে অনুমোদিত ৬টি জাহাজের মধ্যে ৩টি যাত্রা করছে। জোয়ার-ভাটা ও নদীর নাব্যতা অনুযায়ী প্রতিদিনের যাত্রা নির্ধারিত হবে। প্রথমদিনে ১১৭৪ জন পর্যটক অনুমোদিত জাহাজে করে সেন্ট মার্টিনে পৌঁছেছেন।
জাহাজ চলাচলের সময় পলিথিন ব্যাগ ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য পরিবেশবান্ধব বোতল সরবরাহ করছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, “পর্যটকদের নিরাপত্তা ও হয়রানি রোধ, পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা—এই দুই বিষয়েই আমাদের নজর থাকবে। নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়নে পর্যটক ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রয়োজন।”
পর্যটক নিরাপত্তা ও পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টি কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশও নিবিড়ভাবে তদারকি করছে।