বেনাপোল কাস্টম হাউসে ঘুষের টাকাসহ গ্রেপ্তার হওয়া রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সাময়িক বরখাস্ত করেছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সই করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৩৯(২) ধারায় সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়।

ঘটনার সূত্রপাত ৬ অক্টোবর, যখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি অভিযান চালিয়ে শামীমা আক্তার ও তার সহযোগী এনজিও কর্মী হাসিবুর রহমানকে ঘুষের টাকাসহ আটক করা হয়। পরদিন ৭ অক্টোবর দুদক শামীমাকে গ্রেপ্তার দেখায়।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, শামীমা আক্তার বেনাপোল কাস্টমস হাউসের শুল্কায়ন গ্রুপ-৬-এ কর্মরত ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে হাসিবুর রহমান তার ‘নিজস্ব লোক’ হিসেবে কাজ করছিলেন। হাসিবুর রহমান সিএন্ডএফ এজেন্টদের কাছ থেকে শুল্কায়ন ফাইল অনুমোদনের বিনিময়ে ঘুষ আদায় করে তা শামীমার হাতে পৌঁছে দিতেন।
গত ৫ ও ৬ অক্টোবর হাসিবুর রহমান মোট ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ঘুষের অর্থ সংগ্রহ করে তা শামীমার কাছে পৌঁছে দেওয়ার সময় দুদকের টিম অভিযান চালিয়ে তাকে হাতেনাতে আটক করে। অভিযানের সময় নগদ ঘুষের টাকা উদ্ধার করা হয়।

শামীমা আক্তার দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে, তিনি হাসিবুর রহমানকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন এবং ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন সময়ে বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে তাকে টাকা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ ঘুষ লেনদেনে হাসিবুরকে সরাসরি ব্যবহার করতেন তিনি।

দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দীনের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে শামীমাকে মুচলেকা নিয়ে কমিশনারের জিম্মায় রাখা হয়। পরে আদালতে হাজির করে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

এ বিষয়ে এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শামীমা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে ৭ অক্টোবর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন।

এ ঘটনায় দুদক ও এনবিআর আরও তদন্ত চালিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানানো হয়েছে।