রাজশাহী কর আপীল অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধার নাতি হিসেবে ভুয়া সনদ দেখিয়ে সরকারি চাকরি নিয়েছেন মো. হিমেল কাওসার। যুগ পেরিয়ে গেলেও তিনি বহাল তবিয়তে সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক-কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে কর্মরত রয়েছেন। তদন্তে উঠে এসেছে, চাকরি নেওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল না, তবুও অদৃশ্য ক্ষমতায় চাকরি নেওয়া হয়েছে।

মো. হিমেল কাওসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে আব্দুল আউয়াল নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে। অভিযোগে বলা হয়, তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা হেমাজ উদ্দিনকে নিজের দাদা দেখিয়ে রাজশাহী কর আপীল অঞ্চলে চাকরি নিয়েছেন। হেমাজ উদ্দিনের আসল আত্মীয় সম্পর্ক অনুযায়ী, তিনি হিমেলের দাদা নন, বরং দাদার ভাই।

চলতি বছরের ২৬ আগস্ট অভিযোগ জমা পড়ে। তদন্তে অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার আয়েশা বিনতে মিজানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর ৩০ সেপ্টেম্বর কমিশনার মুন্সী হারুনর রশিদ এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিমেল কাওসারের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হেমাজ উদ্দিনের সন্তান নন এবং তিনি ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে চাকরি নিয়েছেন।

তদন্তে আরও উঠে এসেছে, সাবেক কর কমিশনার খন্দকার মো. ফেরদৌস আলমের সুপারিশে মো. হিমেল কাওসারকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবহার করে চাকরি দেওয়া হয়, যদিও সেই কোটা ইতিমধ্যে পূর্ণ ছিল।

এ বিষয়ে হিমেল কাওসারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে চাকরি নেওয়া প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী তাকে চাকরিচ্যুত করা এবং ফৌজদারি মামলা দায়ের করা উচিত। এছাড়া নিয়োগ কমিটিতে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

রাজশাহী কর অঞ্চলের কমিশনার মুন্সী হারুনর রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন,ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। চাকরি বিধিতে এ বিষয়ে কিছু বলা না থাকায় আমরা নির্দেশনা পেতে এনবিআরকে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। এখন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।