বাংলাদেশের শিল্পখাতে টেকসই উন্নয়ন এবং নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। প্রতিষ্ঠানটি জিরো কার্বন নিঃসরণ, সাশ্রয়ী জ্বালানি ব্যবহার, পানি ও বিদ্যুতের কার্যকর নিয়ন্ত্রণসহ পরিবেশবান্ধব সবুজ নীতি অনুসরণ করছে।

সম্প্রতি ওয়ালটন নিজস্ব অর্থায়নে ১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ভাসমান বা ফ্লোটিং সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে। এটি গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে জলাশয়ের পানির ওপর নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি ফ্লোটিং সোলার প্রকল্প। এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বুলনপুরে ২.৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার প্রকল্পে ০.৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ভাসমান সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছিল।

ওয়ালটনের এনভায়রনমেন্ট, হেলথ অ্যান্ড সেফটি বিভাগের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান রাজু বলেন, ফ্লোটিং সোলার প্ল্যান্টের মাধ্যমে শিল্পখাতে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারকে আরও সম্প্রসারিত করেছি। এটি শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন নয়, বরং মাছ চাষ, ভূমি সংরক্ষণ, পানির বাষ্পীভবন হ্রাস ও পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

প্রকল্পটি কার্যকর থাকলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ নেট মিটারিং সিস্টেমের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে। ওয়ালটন ইতিমধ্যে আরো দুটি জলাশয়ে এই ধরনের ফ্লোটিং সোলার প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে, যা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করবে।

ফ্লোটিং স্ট্রাকচারগুলো ফুড-গ্রেড প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি, যা জলজ প্রাণীদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। প্যানেলগুলো এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যাতে মাছের জীবনচক্রে কোনো প্রভাব না পড়ে। এই সিস্টেম আগামী ২০ বছর পর্যন্ত টেকসইভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে

ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে বিভিন্ন রুফটপ, ফুটপাত ও খালি জায়গায় ১০ মেগাওয়াট সৌর শক্তি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়া পানি সাশ্রয় ও পুনঃব্যবহারে প্রক্রিয়াজাতকৃত পানির প্রায় ৭৫% পুনঃব্যবহার, ই-বর্জ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার ও আপসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা ও কার্বন নিঃসরণ কমানো হচ্ছে।

এই উদ্যোগের ফলে প্রতিষ্ঠানটি ৯১১,৮২৩ মেট্রিক টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে এবং সামগ্রিক কার্বন ফুটপ্রিন্ট ১০% হ্রাস পেয়েছে। এটি প্রমাণ করে, ওয়ালটন পরিবেশবান্ধব নীতি শুধু গ্রহণই নয়, বাস্তবায়নেও অগ্রণী এবং টেকসই শিল্প ও সামাজিক দায়বদ্ধতার একটি মডেল তৈরি করেছে।