ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ থেকে বড় পর্দায় নিজের জায়গা করে নিয়েছেন ওপার বাংলার অভিনেতা যীশু সেনগুপ্ত। তবে এই পথচলা একেবারেই সহজ ছিল না। হতাশায় একসময় অভিনয় ছাড়ার কথাও ভেবেছিলেন তিনি। আর সেই কঠিন সময়ে মানসিক ভরসা ও প্রেরণা জুগিয়েছিলেন বলিউডের শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন।
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যীশু সেনগুপ্ত তার সেই অভিজ্ঞতার কথা শোনান। তিনি জানান, ২০০৭ সালে ঋতুপর্ণ ঘোষের চলচ্চিত্র ‘দ্য লাস্ট লিয়ার’–এর শুটিংয়ের সময়ই প্রথম দেখা হয় তার সঙ্গে অমিতাভের। ছবিতে অমিতাভ অভিনয় করছিলেন একজন মানসিকভাবে অসুস্থ থিয়েটার অভিনেতার চরিত্রে, আর যীশু ছিলেন একজন জনপ্রিয় সাংবাদিক।
শুটিংয়ের এক পর্যায়ে ঘটে একটি বিব্রতকর ঘটনা। একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য রিহার্সালের সময় ভুলবশত যীশু অমিতাভের সংলাপ বলে ফেলেন এবং অতিরিক্ত দ্রুত সংলাপ উচ্চারণ করেন। এতে পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ তাকে বকাঝকা করেন। ঘটনাটি যীশুকে এতটাই হতাশ করে যে তখনই তার মনে হয়েছিল—অভিনয় ছেড়ে দেবেন।
কিন্তু পরিস্থিতি বদলে দেন অমিতাভ বচ্চন। ঋতুপর্ণ ঘোষকে থামিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “তুমি এই ছেলেটাকে বকছো কেন? ও কি অস্বীকার করতে পারে যে আমি অমিতাভ বচ্চন?”
এরপর প্রায় ৩০ বার যীশুর সঙ্গে রিহার্সাল করেন অমিতাভ। নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে তাকে সাহস জোগান। যীশুর প্রশ্নে কেন তিনি এতটা করলেন, উত্তরে অমিতাভ বলেন,
“আমাদের দুজনেরই নিজস্ব দর্শক আছে। কিন্তু এটা আমার ধাঁচের ছবি নয়। দর্শক যদি ছবিটা দেখতে এসে দেখে আমি ভালো করেছি আর তুমি পারোনি, তাহলে দৃশ্যটাই নষ্ট হবে। আর সেটা হলে ছবিটাই ব্যর্থ হবে। তাই তোমার ভালো অভিনয় নিশ্চিত করাও আমার দায়িত্ব।”
যীশু বলেন, এই অভিজ্ঞতাই তাকে অভিনয়ে নতুন করে অনুপ্রাণিত করেছে। অমিতাভ বচ্চনের সহানুভূতি ও উৎসাহ না পেলে হয়তো সেই সময়েই তিনি অভিনয় জগতকে বিদায় জানাতেন।