ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার ইলামবাজারে ৯৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেছেন বাংলাদেশে ‘পুশ-ইন’ আতঙ্কে। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে মেয়ের বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন ক্ষিতীশ মজুমদার নামের ওই ব্যক্তি।

পরিবারের দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ভয়ে ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষদের ফেরত পাঠানো হতে পারে। নির্বাচন কমিশনের আসন্ন ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR)’ কর্মসূচির ঘোষণার পর থেকেই তার উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়।

ক্ষিতীশ মজুমদারের নাতনি নির্মলা স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন,
২০০২ সালের ভোটার তালিকায় দাদুর নাম ছিল না। সেই সময় থেকে তিনি আতঙ্কে ভুগতেন। ছোটবেলায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন, কিন্তু কোনো কাগজপত্র ঠিক ছিল না। সম্প্রতি শুনলেন আবার যাচাই-বাছাই হবে, তখন থেকেই চিন্তায় ছিলেন যদি বাংলাদেশে পাঠানো হয়, সেই বয়সে কীভাবে বাঁচবেন!

নির্মলা জানান, আত্মহত্যার আগে তার দাদু কয়েকদিন ধরে খুব অস্বস্তিতে ছিলেন এবং বাড়ির সবাইকে বলতেন, আমার হয়তো আর বাঁচা হবে না।

তবে পুলিশের দাবি, আত্মহত্যার ঘটনায় এখনো কোনো সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি। বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার আমনদ্বীপ বলেন,
পরিবারের সদস্যরা ‘পুশ-ইন’ আতঙ্কের কথা বললেও আমরা কোনো লিখিত প্রমাণ পাইনি। তবু প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ নিয়ে ভয় থেকেই এ ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ক্ষিতীশ পশ্চিম মেদিনীপুরের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। কিছুদিন আগে মেয়ের বাড়ি বীরভূমে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ঘরের ভেতর ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা।

ঘটনাটি স্থানীয় সমাজে গভীর আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, প্রশাসনিক অনিশ্চয়তা ও নাগরিকত্ব যাচাইয়ের আতঙ্কই প্রবীণ মানুষটির মানসিক চাপে আত্মহত্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।