রুশ বাহিনীর দ্রুত ইউক্রেনে অগ্রগতির কারণে বিশ্ব রাজনীতির পরিস্থিতি দিন দিন জটিলতর হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে চলতি ২০২৫ বা আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সুইডেন। এই সম্ভাব্য মহাযুদ্ধের সময় নাগরিকদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুইডেন সরকার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ব্যাপক খাদ্য মজুতের ঘোষণা দিয়েছে।

সুইডেনের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বোর্ড অব এগ্রিকালচার বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির অস্থির পরিস্থিতি যেকোনো সময় গুরুতর রূপ নিতে পারে, এমনকি বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তাই জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শস্য ও অন্যান্য খাদ্য উপাদান মজুতের প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

সরকার এই প্রকল্পের জন্য ৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার বরাদ্দ করেছে। আগামী ২০২৬ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে দেশজুড়ে কয়েকটি বিশাল খাদ্য গুদাম নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। গুদামগুলোতে এমন খাদ্য মজুত রাখা হবে যা প্রত্যেক নাগরিককে যুদ্ধকালের ন্যূনতম দৈনিক ৩ হাজার ক্যালরি খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করবে।

সুইডেনের প্রতিবেশী ফিনল্যান্ডও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনযাপন এবং সুরক্ষা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আগামী মাস থেকে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা রুশ সংবাদমাধ্যম আরটিকে বলেছেন, “পশ্চিমা বিশ্ব রুশবিরোধী হিস্টিরিয়ায় ভুগছে। খাদ্য মজুত ও বিশেষ প্রশিক্ষণের বিষয়টিও সেই হিস্টিরিয়ার অংশ মাত্র। রাশিয়ার কারণে কেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে?”

সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সাথে রাশিয়ার সীমান্ত রয়েছে। ২০২৩ সালে তারা যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোয় যোগ দেয়। পুতিন উল্লেখ করেছেন, “ন্যাটোয় যোগদান তাদের নিরাপত্তা বাড়ায়নি বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষুণ্ন করেছে। এটি ছিল সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত।”

বিশ্বের এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই সুইডেনের খাদ্য মজুতের ঘোষণা বিশ্ববাসীর জন্য সতর্কবার্তা হয়ে উঠেছে, যা সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য দেশের প্রস্তুতির দিক নির্দেশ করছে।