রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি বন্ধ না করলে ভারতীয় পণ্যের ওপর “ব্যাপক শুল্ক” আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন আরও তীব্র হয়েছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে ব্যক্তিগতভাবে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করবে। “তিনি আমাকে বলেছেন, ‘আমি রাশিয়ান তেল নিয়ে আর কিছু করছি না’। কিন্তু যদি তারা (ভারত) এটা চালিয়ে যায়, তাহলে তাদের বিশাল শুল্ক দিতে হবে,”—বলেন ট্রাম্প।
ওয়াশিংটনের অভিযোগ, রাশিয়ার সঙ্গে তেল বা অন্যান্য বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখা দেশগুলো ইউক্রেন যুদ্ধকে পরোক্ষভাবে অর্থায়ন করছে। তাই রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বাণিজ্যিক অংশীদার দেশগুলোতেও নিষেধাজ্ঞা ও শুল্কের হুমকি দিচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ভারতকে সতর্ক করলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখলে ভারতের ওপর বিদ্যমান শুল্কহার আরও বাড়ানো হবে।
চলতি বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্কহার বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত করেছে। এই শুল্ক টেক্সটাইল, ওষুধ, রাসায়নিক ও ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ বহু পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই ভারতীয় পণ্যের ওপর যথেষ্ট শুল্ক দিয়েছি। তারা যদি রাশিয়ার তেল কিনতে থাকে, তাহলে এই শুল্ক আরও বাড়ানো হবে।”
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করা হয়নি। তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের অন্যতম বড় ক্রেতা হিসেবে ভারত নিজ অবস্থানে অটল রয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার তেল বাণিজ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু ভারত তুলনামূলক কম দামে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি অব্যাহত রাখে। এতে মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির জ্বালানি সম্পর্ক আরও মজবুত হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই অবস্থান ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র যেখানে রাশিয়াকে বিশ্ববাণিজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়, সেখানে ভারতের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারের রাশিয়ামুখী বাণিজ্য ওয়াশিংটনের কৌশলকে দুর্বল করছে।