ইসরায়েলের কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর চালানো ভয়ংকর যৌন নির্যাতনের তথ্য ফাঁস হয়েছে। সম্প্রতি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি এক নারী বন্দি তার ওপর চালানো ইসরায়েলিদের পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। প্যালেস্টেনিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইট (পিসিএইচআর) জানিয়েছে, ধর্ষণের সময় বিবস্ত্র অবস্থায় ওই নারী বন্দির ভিডিওচিত্র ধারণ করেও রাখা হয়েছে।
আনাদোলু সংবাদসংস্থা অনুসারে, সম্প্রতি এক ইসরায়েলি আইনজীবী বেন মারমারেলি তার ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দি মক্কেলের ওপর পদ্ধতিগত যৌন সহিংসতা ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন। মারমারেলি বলেছেন, তার ক্লায়েন্ট প্রতিবার তার সঙ্গে সাক্ষাতের পর আরও ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হন।
সাংবাদিক সামিরা মোহিউদ্দিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মারমারেলি বলেন, তার একমাত্র ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দী ক্লায়েন্টকে নিয়মিতভাবে যৌন নির্যাতন, শারীরিক নির্যাতন এবং মানসিক যন্ত্রণা দিচ্ছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যৌন সহিংসতা যতই ভয়ংকর হোক, এটি কেবল বড় ধরনের নির্যাতনের একটি অংশ মাত্র। তার ক্লায়েন্টের পিঠে বুটের আঘাতের চিহ্ন, হাতকড়ার কারণে কবজিতে গভীর দাগ এবং শরীরজুড়ে জখম রয়েছে।
এই আইনজীবী আরও বলেন, ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দীরা বছরের পর বছর বাইরের দুনিয়ার একমাত্র সংযোগ হিসেবে আইনজীবীর সাক্ষাৎ পান। তার ক্লায়েন্টের সঙ্গে যৌন সহিংসতা সাধারণত তার সাক্ষাতের পরপরই ঘটে। মারমারেলি দক্ষিণ ইসরায়েলের কুখ্যাত সদে তেইমান সামরিক ঘাঁটির নির্যাতনের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি দাবি করেন, সেখানে নির্যাতন, যৌন সহিংসতা ও অমানবিক আচরণ নিয়মিত ঘটে এবং সবকিছুই ২৪ ঘণ্টা নজরদারি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়।
২০২৪ সালের আগস্টে ফাঁস হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, সামরিক ঘাঁটিটিতে মুখ নিচের দিকে করে শোয়ানো এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে সেনারা টেনে নিয়ে যাচ্ছে এবং দাঙ্গা দমনের ঢাল দিয়ে ঘিরে তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করছে। এই ভিডিও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ব্যাপক নিন্দা কুড়িয়েছিল এবং কুখ্যাত সদে তেইমান আটককেন্দ্র বন্ধের দাবি উঠেছিল।
ইএফ/