ঢাকার আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য দিয়েছেন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল হাসান। বুধবার (২৯ অক্টোবর) তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ সাক্ষ্য দেন।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেলে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। অন্য দুই সদস্য ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এসআই আশরাফুল জানান, চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল আশুলিয়া থানার পশ্চিম পাশে মনির ও লতিফ মণ্ডলের পুরাতন টিনশেড বাড়ির সীমানা প্রাচীরের ভেতর ছয়টি রাইফেলের গুলি ও একটি চার্জার পড়ে থাকার খবর পান। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে গুলিগুলো জব্দ করেন।

প্রতিটি গুলির পেছনে ইংরেজিতে ‘৭.৬২’ লেখা ছিল, বলেন আশরাফুল।
“আলামতগুলো থানায় জমা দিয়ে পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ২০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এ মামলায় গ্রেপ্তার ৮ আসামিকে বুধবার সকালে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন
সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, কনস্টেবল আবজাল ও মুকুল।

তবে মামলার প্রধান আসামি, সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামসহ আটজন এখনও পলাতক।

ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ৫ আগস্ট, যখন আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। পরে তাদের লাশ পুলিশ ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ভয়াবহ ওই ঘটনায় একজন তখনও জীবিত ছিলেন, কিন্তু তাকেও পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ আছে।

এই নৃশংস ঘটনার পর গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা দায়ের করা হয়।