আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার কার্যক্রম আজ নতুন ধাপে প্রবেশ করছে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের পাশাপাশি প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
প্রসিকিউশন জানায়, মামলার পটভূমি, অভিযোগের ভিত্তি ও তদন্তে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য আজকের সূচনা বক্তব্যে তুলে ধরা হবে। এরপর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষ্যগ্রহণ এগোবে। এর আগে গত ২ নভেম্বর হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
হানিফ ছাড়াও মামলার অন্য তিন আসামি হলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী এবং শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। অভিযোগ গঠনের দিন তাদের বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে পড়ে শোনানো হয়।
উল্লেখ্য, এ মামলায় আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২৮ অক্টোবর তাদের পক্ষে অভিযোগ পড়ে শোনান স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী মো. আমির হোসেন। তিনি প্রসিকিউশনের ফরমাল চার্জে আনা পটভূমি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং তিনটি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চান।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়া শহরে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে ছয়জনকে হত্যার অভিযোগে এ মামলা করা হয়। নিহতরা হলেন শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, সুরুজ আলী বাবু, শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুস্তাকিন, উসামা, ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী ও চাকরিজীবী ইউসুফ শেখ। এ ঘটনায় অসংখ্য মানুষ আহত হন।
তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা পরে ঘটনাবিবরণ, প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য ও বিভিন্ন নথির ভিত্তিতে তিনটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা দেন উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান, হত্যার ষড়যন্ত্র এবং ছয়জনকে হত্যা করতে নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ। আদালতের নির্দেশে পরবর্তীতে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পলাতক চারজনকে হাজির হতে বলা হয়, তবে তারা উপস্থিত না হওয়ায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়।