সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর পুরোটা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হয়েছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া আপিলটি দায়ের করেন।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কয়েকটি ধারা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিল। রায়ে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশে পরিণত হয়েছে।
তবে আদালত পুরো পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল না করে, শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্তি ও গণভোট সংক্রান্ত কিছু ধারাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছিল।
হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ দেওয়া রায়ে বলা হয়
- গণতন্ত্র সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ; দলীয় সরকারের অধীনে গত তিনটি নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়নি।
- পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংযোজিত ২০ ও ২১ অনুচ্ছেদ, এবং ৭ক, ৭খ ও ৪৪(২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল।
- গণভোটের বিধান (১৪২ অনুচ্ছেদ) পুনর্বহাল করা হলো।
রায়ে আরও বলা হয়, পঞ্চদশ সংশোধনীর বাকি অংশগুলো সংসদ ভবিষ্যতে জনগণের মতামত নিয়ে সংশোধন বা পরিবর্তন করতে পারবে।
নতুন আপিলে রিটকারী পক্ষ হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনা করে পুরো পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন।
বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে ছিলেন ড. শরিফ ভূঁইয়া।
বিএনপির পক্ষে ছিলেন জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ও ফারজানা শারমিন পুতুল।
জামায়াতের পক্ষে অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী;
ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান;
আর ইন্টারভেনর হিসেবে ছিলেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ ও সেন্টার ফর ল’ গভর্নেন্স অ্যান্ড পলিসির পক্ষে ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী।
এই আপিলের শুনানি সুপ্রিম কোর্টে নির্ধারিত তারিখে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।