রাজধানীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর কোর্টে দাঁড়িয়ে শহীদ মো. নাদিম মিজানের স্ত্রী তাবাসসুম আক্তার নিহা স্পষ্টভাবে বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যার পূর্ণ বিচার চাই। এর জন্য দায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গুলি চালানো পুলিশ। আমাদের সন্তানরাও তার হত্যার বিচারের দাবি জানাচ্ছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) নিহা এবং তার তিন বছরের ছেলে আনাস বিন নাদিম উপস্থিত ছিলেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বেঞ্চ তার জবানবন্দি রেকর্ড করে। সাক্ষ্য প্রদানের সময় নিহা বিস্তারিত বর্ণনা দেন জুলাই গণ অভ্যুত্থানে ঘটে যাওয়া খুন ও গুলির ঘটনাবলী, যেখানে তার স্বামী নাদিমসহ আরও কয়েকজন নিহত হন।

তদন্ত অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই, নাদিম মিজান, আনাসের বাবা ও আরও কয়েকজন ব্যক্তি রামপুরা এলাকায় ফুফুর বাসায় ফিরছিলেন। পুলিশের তল্লাশি ও গুলিতে নাদিম ও মায়া ইসলাম নিহত হন। একই ঘটনায় মায়ার নাতি বাসিত খান মুসা গুরুতর আহত হন। নিহা আদালতে সবকিছু পুনরায় বর্ণনা করেন।

সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নিহা প্রমাণিতভাবে দাবী করেন, পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পলাতক তিন আসামি হচ্ছেন: খিলগাঁও জোনের সাবেক এডিসি মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান এবং সাবেক এসআই তারিকুল ইসলাম ভুঁইয়া। গ্রেপ্তার রয়েছেন রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকার।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম এবং সহকারীরা উপস্থিত ছিলেন। নিহার স্বাক্ষ্য নেওয়ার আগে ইতোমধ্যে একই ঘটনায় আরও কয়েকজন সাক্ষী জবানবন্দি দিয়েছেন, যেমন গুলিবিদ্ধ বাসিত খানের বাবা মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

নিহার জবানবন্দি আদালতকে বলেন, আমাদের জন্য ন্যায়বিচার অপরিহার্য। স্বামী ও পরিবারের হত্যার দায়ীদের শাস্তি চাই। এই মামলা এখনও চলমান এবং ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে সব তথ্য যাচাই করছে।