জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর পেছনে সরকারের বার্ষিক ব্যয় যেখানে মাত্র ৭৬৫ টাকা। তাও সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় পায় না।সেখানে শিক্ষার মানোন্নয়ন কীভাবে সম্ভব, এমন প্রশ্ন তুলেছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। 

বিজ্ঞাপন

আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর গুলশানে অনুষ্ঠিত ইকোনমিক রিফরম সামিট ২০২৫ এর এক সেশনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

উপাচার্য বলেন, পর্যাপ্ত অর্থায়ন ছাড়া দেশের সবচেয়ে বড় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন। ঢাকা, রাজশাহী বা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীপ্রতি সরকারের বার্ষিক ব্যয় দুই থেকে তিন লাখ টাকা। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীপ্রতি ব্যয় মাত্র ৭৬৫ টাকা। তাও সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় পায় না।

বিজ্ঞাপন

প্রফেসর আমানুল্লাহ জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের দুই-তৃতীয়াংশই বেসরকারি, যেখানে সরকার শুধু এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সামান্য অর্থ দেয়। এই কলেজগুলো শিক্ষার মান বাড়াবে কীভাবে? ফি বাড়ালে সমালোচনা, না বাড়ালে মানোন্নয়ন অসম্ভব।

ভিসি আরও বলেন, এক রিম কাগজের দাম এখন তিনগুণ বেড়েছে, কিন্তু খাতা দেখার সম্মানী এখনও ৪৫ টাকা। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে তা ১৬০ টাকার বেশি।

বিজ্ঞাপন

দেশের সবচেয়ে বড় ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। সারা দেশের প্রায় আড়াই হাজার কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত এসব শিক্ষার্থীর পাঠদানে নিয়োজিত আছেন লক্ষাধিক শিক্ষক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম চালাতে সরকারি অর্থায়নের ঘাটতি ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে বলে জানান উপাচার্য।

তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় সাত লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু দক্ষতার ঘাটতির কারণে তাদের অধিকাংশই বেকার থাকেন। এ সমস্যা সমাধানে সিলেবাস সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে স্নাতক সম্মান পর্যায়ে আইসিটি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

প্রফেসর আমানুল্লাহ বলেন, গবেষণা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে সরকারি সহায়তা বাড়ানো জরুরি। নইলে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডিজবসের প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর। বক্তব্য রাখেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পলিসি অ্যাডভাইজার জিয়া হাসান, ব্রেইন-এর নির্বাহী পরিচালক ড. শফিকুর রহমান, বিল্ডনেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এবং বিএনপি মিডিয়া সেলের মাহমুদা হাবিবা।