ঢাকা ও চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিক তিনটি বড় অগ্নিকাণ্ড দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর বড় প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। সর্বশেষ শনিবার (১৮ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফায়ার সার্ভিস ও নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় সাত ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে বিমানবন্দর ও ফ্লাইট চলাচলে দীর্ঘ বিলম্ব হয়েছে।

ঢাকা কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন প্রধান মো. মিজানুর রহমান বলেন, “কার্গো গুদামের আগুন দেশের শিল্প ও বাণিজ্য ব্যবস্থাকে সরাসরি প্রভাবিত করেছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং দেশের অর্থনীতি অচল করার অপচেষ্টা হতে পারে।” তার অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে উপস্থিত হতে পারেননি, যার ফলে ক্ষতি আরও বৃদ্ধি পায়।

আগুনে আমদানি পণ্যের বিশাল অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গুদামটি বর্তমানে সম্পূর্ণ অচল। অ্যাসোসিয়েশন পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন, দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও অগ্নিনিয়ন্ত্রণ আধুনিকায়ন, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও নতুন গুদামের অস্থায়ী চালু।

এই ঘটনায় জাতীয় অর্থনীতির ওপর প্রভাব বিশাল। আগুনে ক্ষয়ক্ষতি, ফ্লাইট ডাইভারশন এবং আমদানি কার্যক্রমে স্থবিরতা দেশের বাণিজ্য ও সরবরাহ চেইনে বড় ধাক্কা দিয়েছে। গত সপ্তাহে মিরপুরের পোশাক কারখানা ও কেমিক্যাল গোডাউনের অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জনের মৃত্যু এবং চট্টগ্রামের সিইপিজেডে আগুনের ঘটনাও দেশের শিল্পখাতকে ঝুঁকিতে ফেলে।

অতীতে নিমতলী ও চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডি প্রমাণ করেছে, অগ্নিনিরাপত্তা বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ। শীর্ষ পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এই অগ্নিকাণ্ড শুধু ক্ষয়ক্ষতি নয়, দেশের শিল্প, বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে স্থবির করার সম্ভাব্য ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিতও হতে পারে।