রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দুই সহকারী অধ্যাপক সাজু সরদার ও তানজিল ভূঞাকে তদন্ত চলাকালীন অ্যাকাডেমিক ও বিভাগীয় সব কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে তদন্ত কমিটি। সোমবার (২৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রথম সভার সুপারিশের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
এ বিষয়ে তানজিল ভূঞা বলেন, প্রথমে চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এরপর ৬ থেকে ৯ নভেম্বর ওয়ার্ল্ড ফ্রিডম ডে উপলক্ষে একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেই মেলায় তাকে (সহকারী অধ্যাপক সাজু সরদার) কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি, বরং আমাকে সব দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেলা নিয়ে আমাদের একটি মিটিং হয়েছিল, যেখানে কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে আমি তাকে বলি যে ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা আপনি আত্মসাৎ করেছেন। তখন তিনি আমার এক ছাত্রীর সাথে বিয়ের বিষয়টি তুলে আমাকে খোঁটা দেন। এরপর মেলার তিন দিন আগে মেলা বানচালের উদ্দেশ্যে তিনি প্রায় ছয় মাস আগের একটি ভিডিও সামনে আনেন, যেখানে আমার স্ত্রীকে (ছাত্রী) দেখা যায়, আমার দিকে একটি খাতা ছুড়ে মারছেন। এরপর থেকেই তিনি নানা বিষয় তুলে আমাকে নিয়মিতভাবে হেনস্থা করছেন।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলন প্রথমে তাকে বহিষ্কারের দাবিতে শুরু হলেও পরে তা আমার ওপরও এসে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সব প্রমাণ দেখানোর পরও তারা বলেন, আমাদের দুজনের মধ্যকার কোন্দলের কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ বিষয়টি জানিয়ে আজ রাকসু প্রশাসনের কাছে গেলে তারা সিদ্ধান্ত দেন, যেহেতু আমাদের দুজনের কারণেই ঘটনা ঘটেছে এবং বিভাগে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তাই আমাদের দুজনকেই বিভাগের সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাজু সরদার বলেন, প্রশাসনের প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেই সব পরিষ্কারভাবে বলা আছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছিল, এবং তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত কমিটির প্রথম সভার সুপারিশে তাদের বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত বুধবার (১৯ নভেম্বর) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অভিযোগ তদন্তে সিন্ডিকেট সদস্য ও আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. নিজাম উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ও ১১ নভেম্বর ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজিল ভূঞাকে চরিত্রহীন, লম্পট ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তার বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তারা বিভাগের অফিসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চালান।