জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সফল কার্যসম্পাদনের পর কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে তিনি কমিশনের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে জাতীয় ঐক্য ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনের ভিত্তি স্থাপন করেছেন।
চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূসের সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে দীর্ঘ নয় মাসের আলোচনার পর কমিশন “জুলাই জাতীয় সনদ” নামে একটি ঐতিহাসিক দলিল প্রণয়ন করে। গতকাল (৩১ অক্টোবর) কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ আমাদের যুগান্তকারী অর্জন। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক চুক্তি নয়, বরং ভবিষ্যৎ গণতন্ত্র ও রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা। এই সনদ আমাদের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের নীতিগত দিকনির্দেশনা দেবে।
তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমরা নিজেরাই ঐক্য গড়ে সংকটের সমাধান করেছি। বাইরের কেউ আমাদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি। অতীতে বিদেশি মধ্যস্থতার নজির থাকলেও এবার বাংলাদেশ নিজের রাজনৈতিক পরিণতি নিজেই নির্ধারণ করেছে। এটি জাতীয় আত্মমর্যাদার প্রতীক।
ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যারা এই সনদ তৈরিতে অংশ নিয়েছেন, তারা অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। তাঁদের প্রতি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি আরও যোগ করেন, বিশ্বে এমন উদাহরণ বিরল যেখানে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা একসঙ্গে বসে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা তৈরি করেছে। এই সনদ শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসেও এক অনন্য নজির হয়ে থাকবে।
বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও সদস্যবৃন্দ ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, বিচারপতি এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়াকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।
শেষে ইউনূস বলেন, আমাদের ঐক্যই আমাদের শক্তি। যারা রাষ্ট্রবিরোধী বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তাদের মোকাবিলায় এই ঐক্য ধরে রাখতে হবে। কারণ, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গঠনে ঐক্যের বিকল্প নেই।