জাতীয় পরিচয় সনদ বাস্তবায়ন এবং সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে গণভোট আয়োজন ও সংসদ নির্বাচনে অনুপাতিক (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন–পিআর) পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (১৩ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টার বৈঠক শেষে দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, “আমরা চাই নভেম্বরে গণভোট হোক। সংসদ নির্বাচনের আগে এটি করা গেলে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতি চালু সম্ভব। সরকার যদি সিদ্ধান্ত দেয়, কমিশন প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।”

তাহের একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের বিপক্ষে মত জানিয়ে বলেন, “এক সঙ্গে নির্বাচন ও গণভোট হলে উভয়টি বিপদের মুখে পড়তে পারে। আমরা বারবার বলেছি, যদি নির্বাচন নিয়ে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি হয়, তাহলে ‘আম-ছালা দুটোই যাবে’। গণভোট জাতির কাঠামোগত সংস্কার, আর জাতীয় নির্বাচন জনপ্রতিনিধি বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়া—দুয়ের প্রকৃতি ভিন্ন।”

তিনটি সম্ভাব্য ঝুঁকির কথা তুলে ধরেন তিনি:
রাজনৈতিক দলগুলো শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে ব্যস্ত থাকবে, গণভোট উপেক্ষিত হবে। নির্বাচনের কোথাও স্থগিত হলে গণভোটও বাধাগ্রস্ত হবে।সাধারণ ভোটারদের মনোযোগ বিভাজিত হবে, গণভোটের গুরুত্ব হারাবে।

এ সময় জামায়াত প্রতিনিধি দল পিআর এবং ট্র্যাডিশনাল (প্রথাগত) নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে কমিশনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে। তাহের বলেন, “৫৪ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ট্র্যাডিশনাল পদ্ধতি নির্বাচনকে সুষ্ঠু রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। কেন্দ্র দখল, রাতের ভোট, সহিংসতা—এসব সমস্যা সমাধানে পিআর পদ্ধতি কার্যকর হতে পারে। আমরা বলেছি, দুটি পদ্ধতিই বিবেচনায় নেওয়া উচিত।”

তিনি আরও জানান, গণভোট ও পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য জামায়াত প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও আইনগত প্রস্তুতির পক্ষে। দলটি মনে করে, জনগণের মতামত নিয়ে নতুন ধারার রাজনীতির সূচনা সম্ভব।