জাতীয় নির্বাচনের দিন ছাড়া কোনোভাবেই গণভোটের সিদ্ধান্ত মানবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপি জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি রচনা এবং জনগণের সম্মতি নেওয়ার জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোটের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু এখন যে সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে, নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠান সম্ভব নয়।”
তিনি বলেন, “সময় স্বল্পতা, বিপুল ব্যয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশাল আয়োজনের কারণে নির্বাচনের আগে গণভোট করা অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক। একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটই যৌক্তিক।”
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের সূচনা হয়। রাষ্ট্র কাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কার বিএনপির অন্যতম রাজনৈতিক এজেন্ডা।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, বিএনপি অতীতেও রাষ্ট্রীয় সংস্কারের লক্ষ্যে ৩১ দফা, ২৭ দফা ও ‘ভিশন–২০৩০’ প্রকাশ করেছিল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, “জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত কপিতে ঐকমত্যের ভিত্তিতে অনুমোদিত কয়েকটি দফা আমাদের অগোচরে পরিবর্তন করা হয়েছে।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরকারি ও বেসরকারি অফিসে টানানো সংক্রান্ত বিধান বাতিলের বিষয়টি সনদে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তাছাড়া সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির প্রস্তাবও পরিবর্তন করা হয়েছে।”
ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবকে ‘একপেশে ও জবরদস্তিমূলক’ আখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, “এই প্রস্তাবগুলো জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে দীর্ঘ এক বছরব্যাপী আলোচনা অর্থহীন ও প্রহসনমূলক হয়ে পড়েছে।”
তিনি বলেন, “সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় ছিল না। এ ধরনের পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার শুধু জাতীয় সংসদের। তাই গণভোটের আগে এসব পদক্ষেপ গণতান্ত্রিক রীতি ও সংসদীয় সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী।”
ফখরুল আরও বলেন, “গণতন্ত্রে ভিন্নমত থাকবেই, কিন্তু ঐকমত্য কমিশন সেই অধিকারকেই অগ্রাহ্য করেছে। যে প্রস্তাবগুলো দেওয়া হয়েছে, তাতে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হয়নি; বরং জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
ইএফ/