এক সময় গ্রামবাংলার মাঠে-মাঠে জমজমাটভাবে হতো কাবাডি বা হাডুডু খেলা। কিন্তু আধুনিক খেলাধুলার ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলাদেশের এই জাতীয় খেলা। তবে দীর্ঘদিন পর সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ঐতিহাসিক চেঙ্গাকান্দী গ্রামের তরুণরা।

গতকাল শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে চেঙ্গাকান্দী বালুর মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এক মনোমুগ্ধকর কাবাডি প্রতিযোগিতা।

আশপাশের গ্রাম থেকে প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি দর্শক মাঠে ভিড় জমায়। দর্শকদের উচ্ছ্বাসে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। মনে হয় যেন ফিরে এসেছে গ্রামবাংলার সেই সোনালি দিন।

আয়োজক শরীফ বলেন, হাডুডু আমাদের জাতীয় খেলা হলেও এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। গ্রামের ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা এই আয়োজন করেছি। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আজ তা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

প্রতিযোগিতায় লাল দল ও নীল দল মুখোমুখি হয়। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ এই ম্যাচে দুই দলই সমানভাবে জয় ভাগাভাগি করে নেয়।

খেলা দেখতে আসা স্থানীয় দর্শক মো. সিদ্দিক বলেন, এখন সবাই ক্রিকেট আর ফুটবলে মগ্ন। কিন্তু কাবাডিই তো আমাদের শিকড়ের খেলা। আজ এত মানুষ দেখে মনে হলো পুরোনো সময় ফিরে এসেছে।

দর্শক তারা মিয়া বলেন, এই খেলা গ্রামের মানুষকে একসাথে করে। আজ ছেলেমেয়ে, বৃদ্ধ সবাই মিলে মাঠে এসেছে এটাই আসল আনন্দ। এমন আয়োজন বারবার হলে গ্রামের সংস্কৃতি টিকে থাকবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বারদী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল আলী বলেন, কাবাডি আমাদের জাতীয় খেলা হলেও আজ তা হারিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের আয়োজন নিয়মিত করা গেলে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ বাড়বে এবং ঐতিহ্য টিকবে।

কাবাডি খেলোয়াড় শুক্কুর আলী বলেন, কাবাডিতে এখনো অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছেন, কিন্তু সুযোগের অভাবে তারা উঠে আসতে পারেন না। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগ নিলে কাবাডি আবারও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সমাজসেবক জাকির সরকার এবং উদ্বোধক ছিলেন এডভোকেট সানাউল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দি বারাকাহ হাসপাতালের পরিচালক ড. আবদুল মালেক।

উল্লেখ্য, এশিয়া মহাদেশেই কাবাডির উৎপত্তি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয় এবং একে জাতীয় খেলার স্বীকৃতি দেওয়া হয়।