৫.১ ওভারে ইংল্যান্ডের স্কোর ১০ রানে ৪ উইকেট। এই মুহূর্তে টিভি খুলে বসলে আপনার মনে হতে পারে, এটা বোধ হয় টি-টোয়েন্টি চলছে। তবে চোখ একটু কচলে ওভার সংখ্যার পাশে দেখলে ভুলটা ভাঙবে, খেলাটা ওয়ানডে; আর সেখানেই এভাবে হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়েছে ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার। এরপর ইংলিশ ৮ ব্যাটার মিলে তুলেছেন মোটে ২৫ রান। তবে এই ধসের পরও ইংলিশরা ২০০ ছাড়ানো পুঁজি পেয়েছে হ্যারি ব্রুকের কল্যাণে, তার দারুণ সেঞ্চুরির ইংল্যান্ডকে নিয়ে গেছে ২২৩ রান পর্যন্ত।
অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে নিজেদের যাচাইয়ের সিরিজ হিসেবে ধরা হচ্ছে ইংল্যান্ডের নিউজিল্যান্ড সফরকে। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে একের পর এক ব্যাটার ফিরেছেন ব্যর্থ হয়ে। জেমি স্মিথ, বেন ডাকেট, জো রুট আর জেকব বেথেল – সবাই মিলে তৈরি করলেন ভয়ানক এক ধস। কিছুক্ষণের মধ্যেই জস বাটলার ফেরেন, তখন স্কোরবোর্ডে ৩৩/৫।
স্যাম কারানও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫৬ রানে আউট হন তিনি, আর তাতেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিপদের গন্ধই পাচ্ছিল ইংলিশরা।
তবে এ হাহাকারের মাঝেও একাই দাঁড়িয়ে ছিলেন হ্যারি ব্রুক। দলের অধিনায়ক ও টেস্ট সহ–অধিনায়ক নির্বাচিত এই ব্যাটার যেন ঠিক করে রেখেছিলেন, বিপর্যয় তাকে ছুঁতে পারবে না। তিনি শুরু থেকেই আক্রমণে যান। তার প্রথম ৩৬ রানই আসে শুধু বাউন্ডারিতে। শেষ পর্যন্ত ১০১ বলে করেন ১৩৫ রান। তার এই ইনিংস ইংল্যান্ডকে ৩৫.২ ওভারে ২২৩ রানে পৌঁছে দেয়, যা একসময় অসম্ভব মনে হচ্ছিল।
নয়টি চার ও এগারোটি ছক্কায় সাজানো ইনিংসে তিনি তিনটি ছক্কা মারেন এক ওভারে, জেকব ডাফির বলে শতরান পূরণ করেন ৮২ বলে। এরপর আরও চারটি ছক্কা মারেন তিনি। তার ইনিংসে দলের বাকি কেউ ছয়ের বেশি রান করতে পারেননি, কেবল জেমি ওভারটন ছাড়া।
ওভারটন ৫৪ বল খেলে করেন ৪৬ রান। সপ্তম উইকেটে ব্রুকের সঙ্গে তার ৮৭ রানের জুটি কিছুটা লড়াই ফেরায় ইংল্যান্ডকে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০২২ সালের টেস্টে তার অভিষেক ইনিংসের মতোই এবারও তিনি দলের ধ্বংসস্তূপে কিছুটা আশা জাগান। তবে এবারও অর্ধশতকের আগে থামেন, ধীরগতির বলে ক্যাচ দেন কাভারে।
এরপর ব্রেডন কার্সও ফেরেন প্রথম বলেই। পয়েন্টে ক্যাচ নেন ফিরে আসা কেন উইলিয়ামসন। এক সময় যে ম্যাচটায় বড় হারের শঙ্কায় ছিল ইংলিশরা, সেখানে হ্যারি ব্রুকের একার লড়াই তাদেরকে অন্তত লজ্জা থেকে বাঁচায়।